journalism and media studies

সাংবাদিকতা কোর্স । Journalism Online Course

জার্নালিজম বা সাংবাদিকতা হচ্ছে কোন সংবাদযোগ্য ঘটনা বা তথ্যের বিস্তারিত ‍বিষয় কোন মাধ্যমে জনগনের কাছে প্রকাশ করা।  শুধুই জনগনকে নতুন কোন তথ্য জানালেই হবে না সে তথ্য হতে হবে দর্শন যোগ্য, নিরপেক্ষ ও নির্ভূল।  একজন সাংবাদিক প্রতিবেদন লেখার সময় প্রথমত খেয়াল রাখতে হবে ভাষাগত বিষয়টি, এ ক্ষেত্রে আপনাকে অনেক বেশি কমিউনিকেটিভ হতে হবে।  মানুষ যেন আপনার প্রতিটি কথা বা লেখা বুঝতে পারেন।

মূলত সিটিজেন জার্নালিজম কি? সিটিজেন জার্নালিজম বাংলায় অর্থ দাড়ায় নগর সাংবাদিকতা।  সিটিজেন জার্নালিজম নিয়ে বর্তমান সময়ে আলোচনা করলে সাংবাদিকতার একটি নতুন ধারা বেরিয়ে আসে।  তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে এটি নিউ মিডিয়া বা নতুন ধারার মাধ্যম বলা যায়।  আমরা আমাদের চারপাশের ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা লিখে, অডিও বা ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেমন ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব এবং বিভিন্ন অনলাইন ব্লগে তুলে ধরি এটাকেই বলা হয় সিটিজেন জার্নালিজম বা নগর সাংবাদিকতা।  আমরা অনেকে জানিওনা কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা সাংবাদিকতা করে ফেলছি।  যেমন কিছু দিন আাগে আলোচিত রিফাত হত্যার ভিডিওটি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসে।  আর যে ব্যাক্তি ভিডিও টি ধারন করেছে তাকে নগর সাংবাদিক বলতে পারি।  তার মানে যে কোন সচেতন নাগরিক সিটিজেন জার্নালিজম বা নগর সাংবাদিকতা করতে পারেন।

বর্তমানে গ্লোবালাইজেশন ও তথ্য প্রযুক্তি অভাবনীয় উৎকর্ষতার যুগে সিটিজেন জার্নালিজম বা নগর-সাংবাদিকতার জনপ্রিয়তাকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।  সংবাদ জানার ক্ষেত্রে মূলধারার গণমাধ্যেমের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে এখন এই ধারাটির প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।  বিভিন্ন নামে বর্তমানে এই সাংবাদিকতা করা হয়ে থাকে এর মধ্যে রয়েছে।

১.প্রান্তীক সাংবাদিকতা

২.নেটওয়ার্ক সাংবাদিকতা

৩.ওপেন সোর্স সাংবাদিকতা

প্রান্তীক সাংবাদিকতা : প্রান্তিক শব্দটি দেখেই বোঝা যায় এই সাংবাদিকতা মূল লক্ষ্যই হচ্ছে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর সমস্যা-সম্ভাবনার কথা তুলে ধরা। আজকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ব্লগ তৈরী করে সেখানে দলিত, হিজড়াসহ ইত্যাদি পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর নানা বিষয় সম্পর্কে ভিডিও তৈরী অথবা লেখনীর মধ্যে দিয়ে তাদের অবস্থা সম্পর্কে সরকারসহ সমাজের অন্যান্য মানুষের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। এর মাধ্যেমে অনেক খবর আমাদের সামনে চলে আসে যা অনেক সময় মূল ধারার গণমাধ্যমের চোখ এড়িয়ে যায়।

নেটওয়ার্ক সাংবাদিকতা: যারা সাংবাদিকতায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি এ বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষন নিয়েছে তাদের সহযোগিতা নিয়ে সাংবাদিকতা করাকে নেটওয়ার্কিং সাংবাদিকতা বলা হয়ে থাকে। অভিজ্ঞ সাংবাদিকদের সঙ্গে তথ্য, চিন্তা বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে এই সাংবাদিকতা করা হয়ে থাকে। এরমধ্যে দিয়ে যারা অ্যামেচার সাংবাদিক রয়েছেন তারা তাদের কর্মদক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে পারদর্শী হয়ে থাকে।

ওপেন সোর্স সাংবাদিকতা: একটি প্রতিবেদন লেখার পর সেটাতে দেখে বা পড়ে পাঠক অথবা শ্রোতাদের মনেই হতে পারে যে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে তাতে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাদ পড়ে গেছে। এ বিষয়টি তারা প্রতিবেদন লেখকের সঙ্গে শেয়ার করতে পারে। তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই বাছাই করেও অনেক সময় প্রতিবেদনটি আরো সমৃদ্ধ করে তোলা যেতে পারে। এই ধরনের সাংবাদিকতাকেই ওপেন সোর্স সাংবাদিকতা বলা হয়ে থাকে।

রকমভেদে নগর-সাংবাদিকতা নানা ভাবে করা হয়ে থাকে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হচ্ছে : মানবিক আবেদনধর্মী বা ফিচারধর্মী ব্লগ, কোনো বিষয়ের ওপর মন্তব্যধর্মী ব্লগ, তাৎক্ষণিক ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা নিয়ে ব্লগ, ভিডিও ব্লগ, অডিও ব্লগ, ফটোব্লগ, মাইক্রোব্লগ এবং বর্তমানে জনপ্রিয় ফেসবুক লাইফ বা মোজো মানে মোবাইল জার্নালিজম ইত্যাদি।

লক্ষ্য করুন, আমাদের হাতে যেহেতু একটি স্মার্টফোন আছে তাই হরহামেশাই আমরা জেনে হোক আর না জেনে হোক, একজন নাগরিক সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছি।  কিন্তু শখের বসে এসব কাজ থেকে আমরা কোন বেতনভাতা পাচ্ছি না।  তবে সুনির্দিষ্ট মাধ্যমে আমাদের এই কাজগুলো তুলে ধরতে পারলে এবং জনপ্রিয়তা পেলে, এখান থেকেও আয়ের সুযোগ রয়েছে।  শুধু আয় নয়, আপনি করতে পারেন দেশের জন্য কাজ।

একটি উদাহরণ দেয়া যাক, সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন নামে এজন ব্যারিস্টার, যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই ফেইসবুক লাইভে বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরছেন।  কোন এলাকার ব্রিজ ভাঙ্গা, রাস্তাঘাট খারাপ হওয়ার কারণে, কোন এলাকার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ইত্যাদি নানা রকম সামাজিক অসঙ্গতি।  অর্থাত তিনি কিন্তু একজন সিটিজেন জার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।  সম্পুর্ন ব্যক্তি উদ্যোগে তিনি এসব কাজ করছেন।  এ কাজের জন্য তিনি কোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত নন।

তবে যথাযথ প্রসিডিউর মেইনটেইন করলে, বিজ্ঞাপন থেকে প্রাপ্ত অর্থে তিনি ফেইসবুক কর্তুপক্ষের কাছ থেকে পেতে পারেন।  বা তার এই ভিডিওগুলো ইউটিউবে দিলেও আর আয় হতে পারে।  অর্থাত এখানেই বেতনভাতা না থাকলেও আয়ের সুযোগ আছে।  ঠিক এমনি ভাবে, আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা আমরা যে কেউ গণমানুষের কাছে তুলে ধরলে, আমিও একজন নাগরিক সাংবাদিক।

আমাদের আগামী লেশনটিতে থাকবে সংবাদ কি বা কোন বিষয়টিকে আপনি সংবাদ হিসেবে প্রচার করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা।

আর আমাদের এই পুরো কোর্স থেকে আপনি শিখতে পারবেন, আপনি কিভাবে একজন সংবাদ কর্মী হয়ে উঠতে পারেন।  হোক তা মুলধারা বা ফ্রি ল্যান্সার বা নাগরিক সাংবাদিক।  হাতে কলমে আরো শিখতে পারবেন কিভাবে রিপোর্টিং , সম্পাদনা, ভিডিও সম্পাদনা, চিত্রগ্রহন সহ সংবাদ উপস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়।  সর্বোপরি একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে আপনি কি করতে পারবেন আর কি পারবেন না, অর্থাত এই পেশারও কিছু নিয়ম কানুন, নীতি নৈতিকতা আছে, সেসব সম্বন্ধেও ধারনা দেওয়া হবে।

What's your reaction?

Excited
0
Happy
0
In Love
0
Not Sure
0
Silly
0

You may also like

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *