মোহসীন-উল হাকিম যুদ্ধ ছাড়াই দস্যুমুক্ত করলেন সুন্দরবন
২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলায় বাংলাদেশে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সাংবাদিক মোহসীন-উল হাকিম তখন এটিএন নিউজে কর্মরত। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার প্রতিবেদন করতে মোহসীন-উল হাকিম যান খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার দুর্গত এলাকায়। জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় এক জেলে তাকে বলেন, ‘আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব। কিন্তু সুন্দরবনের দস্যুরা যে ক্ষতি করছে তা কাটিয়ে উঠতে পারব না। আমাদের বাঁচান। পারলে দস্যুদের ঠেকাতে কিছু করুন।’ অসহায় জেলেদের এই আকুতি মোহসীন-উল হাকিমকে যথেষ্ট প্রভাবিত করে।
এরপর থেকে তিনি বারবার ছুটে গেছেন সুন্দরবনে এবং বনদস্যুদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ শুরু করতে থাকেন। তাদের সাথে কথা বলে বুঝতে পারেন তারাও হিংস্রতা ছেড়ে ফিরতে চায় স্বাভাবিক জীবনে। ধীরে ধীরে মোহসীনের সঙ্গে বনদস্যুদের এক ধরনের আস্থার সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তিনি বনদস্যুদের নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রচার করতে থাকেন। এটিএন নিউজ থেকে চ্যানেল টুয়েন্টিফোর, তারপর যমুনা টিভিতে প্রতিবেদনগুলো প্রচার করতে থাকেন। যমুনা টেলিভিশনে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রচার হওয়ার পর ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে র্যাবের শীর্ষ পর্যায় থেকে যোগাযোগ করা হয় সাংবাদিক মোহসীনের সঙ্গে। দ্রুত চলতে থাকে দস্যুদের আত্মসমর্পণের কাজ। মোহসীন-উল হাকিমের মধ্যস্ততায় ২০১৬ সালের ৩১ মে ৫২টি আগ্নেয়াস্ত্র আর সাড়ে ৫ হাজারের বেশি গুলি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় দস্যুদল মাস্টার বাহিনী। ক্রমান্বয়ে চলতে থাকে আত্মসমর্পণ। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবনকে ‘দস্যুমুক্ত সুন্দরবন’ ঘোষণা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
লেখা উইকিপিডিয়া থেকে নেয়া