Photography

JPEG ও RAW ফরমেটের পার্থক্য ?

JPEG RAW ফরমেটের পার্থক্য ?

ডিএসএলআর এ JPEG ও RAW ফরমেটে ছবি তোলার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে কেক মিক্স দিয়ে কেক বানানো বনাম নিজে থেকে কাস্টমাইজ করে কেক বানানো। মিক্স কেক সুস্বাদু, দেখতে ভালো, কেক বানাতে অনেক সময় বাঁচায়। ‘স্ক্যাচ’ বেকারের বিশেষ পদ্ধতি ছাড়াও নিজের প্রতিভাও কাজে লাগায়। কেক মিক্স সুবিধাজনক, কারণ এটা বানাতে কাস্টমাইজস কেকের মতো সিদ্ধান্ত নিতে বেশি ঝামেলা পোহাতে হয় না। অর্থাৎ যারা ফটো নিয়ে কাজ করে আনন্দ পান এবং ফটো তোলার পর রিটাচিং করা বা ম্যানিপুলেট করতে চান তবে ‘র’ ফরম্যাটে ছবি তুলতে পারে, যা কাস্টমাইজইড কেক বানানোর মতো।

ডিএসএলআর ক্যামেরায় ‘র’ এবং জেপিইজি দুই ফরম্যাট এ ফটো তোলা যায়। ‘র’ ফরম্যাটে ফটো তোলা হলে ফটোশপ বা অন্য কোন ফটো এডিটিং সফটওয়্যারে অনেক কিছুই পরিবর্তন করা সম্ভব। জেপিইজি এর ক্ষেত্রে এটা অনেক লিমিটেড।

শখের ফটোগ্রাফার এবং অনেক সময় প্রোফেশনালরা জেপিইজি ফরমেটে ছবি তুলে থাকে। জেপিইজি ফরমেট আসলে ক্যামেরাতেই প্রসেস হয়ে সেভ হয়। এই ফরম্যাটে ছবির ফ্রেমিং করা সহজ। এটা আপনি সাথে সাথেই প্রিন্ট করতে পারেন বা শেয়ার করতে পারেন। এই ফরম্যাটে ফাইল সাইজও অপেক্ষাকৃত ছোট হয়। ফলে আপনি দ্রুত ফটো তুলতে পারবেন এবং মেমরি কার্ডের ফরম্যাটের তুলনায় অনেক বেশি ফটো ধারণ করা যাবে। বেশিরভাগ মানুষই জেপিইজি ফরম্যাটে ছবি তুলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে।

ফরম্যাটে ছবি তোলা হচ্ছে: ‘র’ ডাটা সক্রিয়ভাবে ডাটা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া আনম্যানিপুলেটেড করে। ‘র’ ফরম্যাট ফটোগ্রাফারকে ছবি তুলে পরে যেকোনো ফরম্যাটে নেওয়ার স্বাধীনতা দেয়। এতে ছবির আকার ইচ্ছেমতো বাড়ানো বা কমানো যায়। ‘র’ ছবির ফাইলের আকার বেশ বড় হয়। তাই এই ফরম্যাটে ছবি তুলতে বেশি ধারণক্ষমতার মেমোরি কার্ড লাগে। সৃজনশীল ফটোগ্রাফাররা তাই অনেক সময় ‘র’ ফরম্যাটে ছবি তোলে।

আপনার ফটো তোলা এবং কাজের ধরণ দেখে ঠিক করুন কোন ফরম্যাটে আপনি ফটো তুলবেন। আরেকটা কাজ করতে পারেন। বেশিরভাগ ডিএসএলআর একই সঙ্গে ‘র’ এবং জেপিইজি (বেসিক) ফরম্যাটে ছবি সেভ করতে পারে। আপনার যদি দ্রুত ফটো তোলার প্রয়োজন না থাকে তবে আপনি এই অপশনটি বেছে নিতে পারেন। জেপিইজি ফরম্যাট তাৎক্ষণিক ব্যবহারের জন্য আর ‘র’ ফরম্যাট পরবর্তীতে রিটাচিং বা ম্যানিপুলেশনের জন্য।

‘র’ পিক্সেলের ১২-১৬ বিটের কালার ইনফরমেশন থাকে, যা বিভিন্ন সূক্ষ রঙ প্রদান করে। জেপিইজি পিক্সেল ৮ বিটের হয়, যা মানুষের চোখে মতো করে দেখতে পারে।

  •   হোয়াইট ব্যালেন্স: এর মাধ্যমে ফটোগ্রাফার লাল, সবুজ ও নীল রংয়ের শেডের সমন্বয় করে ধূসর ও সাদা রঙয়ের বিশুদ্ধতার নিশ্চয়তা দেয়।
  •  কালার স্যাচুরেশন: রঙয়ের আধিপত্য বাড়ায়। রঙয়ের সম্পৃক্তি যত বেশি, ধূসরতা তত কম হয়।
  •  কনট্রাস্ট শার্পনেস: ফটোগ্রাফে কনট্রাস্ট হচ্ছে ফটোগ্রাফের মধ্যে কোনো রঙ এর টোনের পরিমাণের পার্থক্য। আর এককথায় অস্পষ্টতার বিপরীত হল শার্পনেস।
  • নয়েজ রিডাকশান অ্যান্টিলাইজিং: দুই ধরনের নয়েজ আছে। তা হল: লুমিন্যান্স ও ক্রোম। লুমিন্যান্স গ্রাইনিনেস দেয় ও ক্রোম ক্ষতিকর লাল ও নীল রঙ প্রদান করে। নয়েজ রিডাকশান রঙয়ের ক্ষতি ও শার্পনেস কমায়। ফলে ছবিতে এর সুক্ষ ব্যালেন্স প্রয়োজন।
  • এক্সপোসার কারেকসন: ফটোগ্রাফারদের একটি সাধারণ সমস্যায় পড়ে। তা হল ছবি ওভার এক্সপোসড (বেশি আলো) অথবা আনডার এক্সপোসড (কম আলো) হয়ে যায়।

ছবির সমন্বয় ও বর্ধিতকরণের পর ‘র’ ছবি জেপিইজি অথবা টিআইএফএফ ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়। জেপিইজি ফরম্যাটের ৪-বিট ইমেজের আ্যাগ্রেসিভ কমপ্রেসন দরকার। টিআইএফএফ ফাইলে কমপ্রেসন (৮-বিট ও ১৬-বিট) দরকার হতেও পারে, নাও হতে পারে। অর্থাৎ এতে করে ছবির সাইজ ছোট হবে, কিন্তু কোনো ধরনের তথ্য কমবে না ও ছবির কোয়ালিটি নষ্ট হবে না।

অনেকেইফাইল কেন পছন্দ করে?
বিভিন্ন অপশন থাকার পরও অনেকেই ‘র’ ফরম্যাটে ছবি তোলা পছন্দ করে। কারণ এর দ্বারা ছবির বিভান্ন সংশোধন ও সমন্বয় করা সম্ভব। ‘র’ ফরম্যাটকে ছবির নেগিটিভও বলা হয়, এর মাধ্যমে মৌলিক ছবি নিখুঁতভাবে সংরক্ষণ করা যায়। ছবি তোলার সময় ওভার ও আনডার এক্সপোজড ছবির কারেকশন করে সঠিক কালার আনতে সাহায্য করে।

অনেক ফটোগ্রাফারের কাছেফরম্যাট প্রতিবন্ধক কেন?
‘র’ ছবি তোলায় কোনো আন্তর্জাতিক মান নেই। প্রতিটি ক্যামেরায় ‘র’ এর আলাদা আলাদা ক্ষমতা, এমনকি এর ব্যাপ্তিও ভিন্ন। উদাহরণ স্বরুপ: ক্যানন ক্যামেরার ক্ষেত্রে ‘র’ ফাইল হচ্ছে .cr2। নাইকনের ক্ষেত্রে .nef এবং মিনোল্টাসের ক্ষেত্রে .mrw। ‘র’ এডোব ফটোশপে .dng মানের কাছাকাছি, কিন্তু সব ছবি এ ক্ষেত্রে প্রয়োগের জন্য ক্যামেরা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক মান না থাকার ফলে মার্কেটে বিভিন্ন ধরনের ‘র্য’ ফরম্যাট আসে আবার চলেও যায়। ফলে ‘র’ ফরম্যাটে ছবি তুলে পরে তা অনেক সময় ব্যবহারের জন্য অনুপযোগী ও অচল হয়ে পড়ে।
বেশিরভাগ এসএলআর ও হাই-ইন্ড ক্যামেরায় ‘র’ রেডি এবং ‘র’ সফটওয়্যার থাকে। প্রয়োজনে তা ডাউনলোড করা যায়। যারা নতুন ফটোগ্রাফি শুরু করেছেন ‘Do-it-yourself’ এই ‘র’ ফাইল কনভার্সন তাদের জন্য নয়। অভিজ্ঞ ফটোগ্রাফার যারা জেপিইজি ফরম্যাটে ছবি তুলে বিরক্ত এবং নিজেই ছবির ম্যানুপুলেশন করতে পারে তারা এই কনভার্সন ব্যবহার করতে পারে।

অনিন্দিতা নাহীন
ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার

What's your reaction?

Excited
0
Happy
0
In Love
0
Not Sure
0
Silly
0

You may also like

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More in:Photography

Learn Photography in Bangla - ক্লিক এন টেক Photography

Learn Photography in Bangla

Learn Photography in Bangla ফটোগ্রফি এক ধরনের শিল্প তার সাথে রয়েছে বিজ্ঞানের ছোয়া এই দুই ...