কম্প্রেশান কী এবং কেন?
একটা ছবিকে দৈর্ঘ্য-প্রস্থে অনেকগুলো টুকরা করলে কী পাওয়া যাবে? নির্দিষ্ট একটা রং ছাড়া কিন্তু আর কিছুই না, তাই না? আর এই রং পাওয়া যাবে রেড, গ্রিন, ব্লু এর নির্দিষ্ট পরিমানের মিশ্রনে। এমন ছোট্ট রংএর আয়তনটিকেই বলা হয় পিক্সেল। এক একটি পিক্সেলে রেড,গ্রিন,ব্লু (R,G,B) এর ডিসপ্লে ইউনিট (এলইডি, ডিএলপি ইত্যাদি) থাকে। প্রত্যেকটা পিক্সেলের R,G,B এর ভেল্যু ০ থেকে ২৫৫ পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে। এখন প্রত্যেকটা পিক্সেলের কালার ভেল্যুগুলো যদি একটা ফাইলে সেভ করে রাখা হয়। এবং পরে এই অনুযায়ী আবার তা স্ক্রিনে আঁকা হয় তাহলেই কিন্তু ছবিটি স্ক্রিনে দেখা যাবে। আর এই চিন্তাটিই প্রথম করেন Steven J. Sasson নামের এক ভদ্রলোক। ৩.৬ কেজি ওজনের এবং ০.০১ মেগা পিক্সেলের প্রথম ডিজিটাল সাদাকালো ক্যামেরাটি তিনিই তৈরী করেন। প্রায় ২৩ সেকেন্ড লাগতো এই ক্যামেরায় একটা সাদাকালো ছবি ওঠাতে।
এর পরেই শুরু হয়ে গেলো কে কত বেশী মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা বানাতে পারে। কিন্তু সমস্যা হলো, এক ইঞ্চিতে পিক্সেলের পরিমান যত বাড়তে থাকলো ততই ছবি নিখুঁত হতে থাকলো আর পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকলো ছবির ডিস্ক-সাইজ। আগে ছবি হতো কিলোবাইটে আর এখন ছবি হতে শুরু করলো মেগাবাইট, গিগাবাইটে। তাহলে এই ছবি কিভাবে স্টোর করা হবে? কিভাবে পাঠানো হবে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে? তখনই প্রয়োজন হলো কম্প্রেশানের। কম্প্রেশান দুই ধরনের হয় lossless ও lossy।
মানুষের চোখে দুই রড ও কোন নামক দুই ধরনের কোষ থাকে। রডের পরিমান থাকে অনেক বেশী, প্রায় ১২.৫ কোটি। এর কাজ হলো আলোর তীব্রতা কতটুকু তা নির্ধারণ করা। আর কোন থাকে ৪৫ লক্ষের মত। এর কাজ হলো রং চেনা। পরিমান ও স্পর্শকাতরতার জন্যই আমাদের চোখ আলোর তীব্রতার তারতম্য বেশ বুঝতে পারে। কিন্তু রং এর সামান্য এদিক সেদিক হলে তা আমাদের চোখ তেমন একটা টের পায়না।
আর এই জ্ঞানের উপর ভিত্তি করেই ছবি কম্প্রেশনের মূল কাজটি করা হয়। দেখা গেলো প্রত্যেকটি পিক্সেলে জ,এ,ই ভেল্যু না রেখে প্রতি দুইটি, চারটির জন্য কালার ভেল্যু রাখা হয়। এতে ছবির ডিস্ক-স্পেস কম প্রয়োজন হয়। তাই ষ্টোর করতেও সুবিধা, ইন্টারনেটে এটাচ করতেও সুবিধা।
ভিডিও হলো প্রতি সেকেন্ডে একাধিক (৫,২৫,৩০ ইত্যাতি) ষ্টিল পিকচারের একটা সমষ্টি মাত্র। ভিডিও কম্প্রেশানে হয় প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা ছবি কম্প্রেস করা হয় না হয় একটা ছবি থেকে আরেকটা ছবির পার্থক্যটুকু শুধু হিসাব করে তা কম্প্রেস করা হয়। তবে কম্পেশানের মূল চিন্তাটি কিন্তু একই।
জাহাঙ্গীর হোসেন (অরুণ) আইটি হেড, বৈশাখী টেলিভিশন