ডিজাইন এর মৌলিক বিষয়
কিভাবে নকশা বা ডিজাইন করবো তা জানতে হলে প্রথমেই মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। কারণ যেকোনো কিছুর ক্ষেত্রেই প্রাথমিক জ্ঞান সবচেয়ে জরুরি। গ্রাফিক্স ডিজাইন বলতে বোঝায় রং, আকার, আকৃতির সমন্বয়। এই ক্ষুদ্র বিষয়গুলো সুন্দরভাবে করেই একটি ডিজাইনের মুখ্য বিষয় ফুটিয়ে তোলা হয়। অর্থাৎ একটি ক্রিয়েটিভ প্রসেস বা আইডিয়া আর্ট ও টেকনোলজির সমন্বয়ে প্রকাশ করাই হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইন। আমরা যদি কাউকে ডিজাইনের কাজ শেখাতে যাই তাহলে প্রথমেই নিজেদের সর্বোচ্চ জ্ঞান থাকতে হবে।
যারা এখন পর্যন্ত জানেন না যে কিভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন করতে হয় তাদের জন্য কিছু নির্দেশিকা দেয়া হলো। লওর্যার্যান ম্যারি (Lauren Marie) একজন অ্যামেরিকান গ্রাফিক্স ডিজাইনার যার একটি আর্টিকেল নিয়ে নিচে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।
রং: একটি ডিজাইনের ক্ষেত্রে রংয়ের প্রভাব অনেক বেশি। এটি কেমন রূপ বা আকৃতি ধারণ করবে তা অনেকটাই নির্ভর করে রংয়ের উপর। যেমন লাল রং খুব কঠিন ও কড়া একটি প্রভাব বিস্তার করে যা ভালোবাসা, রাগ এবং উত্তেজনাকে বোঝায়। নীল ও সাদা রংয়ের ডিজাইনটির মধ্যে এক ধরনের শান্ত, শান্তিপ্রিয়, সুশীল এবং শুভ্রতা প্রকাশ পায়।
রেখা: ডিজাইনের ক্ষেত্রে এর লাইন বা রেখাটি কেমন হবে সোজা না চিকন বা পুরু ও সরু তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রকার বা প্রকৃতি কেমন দাঁড়াবে তা অনেকটাই লাইনের উপর নির্ভর করে। একটি পুরু রেখা বালক বা কিশোরদের মনোভাব ফুটিয়ে তোলে আবার একটি সোজা বা চিকন লাইন অনেক বেশি পরিশুদ্ধ ও বোধশক্তি সম্পূর্ণ। দুটি লাইনের মধ্যে কিভাবে পরস্পর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হবে তাও গুরুত্বপূর্ণ।
আকৃতি বা গঠন: কোন একটি ডিজাইনের গঠন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এর দ্বারা বোঝা যায় যে নকশাটির আলোচ্য বিষয় কি নিয়ে। কোনযুক্ত যেমন চারকোণা বা ত্রিভুজ আকৃতির ডিজাইন পুং জাতীয় বিষয়কে বোঝায়। আবার সমতল বা বক্র রেখাগুলো স্ত্রী জাতীয়। চারকোণা আমাদের কাছে খুবই পরিচিত একটি আকার ফলে এটা অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য ও স্থায়ী। আর গোলাকৃতির ডিজাইন আহলাদিত, শান্তিপ্রিয় ও ঐক্যতার রূপ তুলে ধরে।
আয়তন: প্রতিটি গ্রাফিক্সের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে এর মৌলিক উপাদানগুলোর ভারসাম্য, রংয়ের ব্যবহার আকার ও আয়তনের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকে।
স্থান: গ্রাফিক্সের ক্ষেত্রে স্থান মূলত একটি সুশীল ও সমৃদ্ধ বিষয়কে বোঝায়। ডিজাইনের যে অংশটি দেখলে চোখের শান্তি হবে যা দৃষ্টিসুলভ। যে নকশা যত হালকা তার ব্যাপ্তি তত বেশি। জায়গার অসৎ ব্যবহার একটি ডিজাইনকে কুৎসিত ও অসুভ করে তুলতে পারে। আবার ডিজাইনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি খালি জায়গা থাকলে তা অসম্পূর্ণ মনে হতে পারে। ফলে ভেবেচিন্তে জায়গার যথাযথ ব্যবহার করা উচিত।
গঠন বিন্যাস: টেক্সচারের মাধ্যমে ডিজাইনের বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলা হয়। চাক্ষুস সৌন্দর্য্য তুলে ধরতে এর কার্যকরী অনেক। এটি একটি ডিজাইনকে অনেক বেশি সুলভ ও তুলনাহীন করে তোলে।
মূল্য বা মর্যাদা: কোন একটি ডিজাইনের মূল্য তার একতা অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়। এটা খুবই অসাধারণ একটি কৌশল যার কারণে কেন্দ্রীয় বিষয়টি নজর কাড়ে। এটি দ্বারা প্রত্যেকটি অংশের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা হয়।
গ্রাফিক্স ডিজাইনের উদ্দেশ্য: গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো যোগাযোগ বা সমন্বয়। একটি নকশা সম্পূর্ণ হওয়ার পর যদি আমরা নিজেকে প্রশ্ন করি যে কিভাবে প্রতিটি উপাদান ব্যবহার করা হলো বা কোন রং কেন ব্যবহার হলো, তাহলে এর উদ্দেশ্য জানা যাবে। আপনার আশেপাশের বস্তুগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করুন দেখুন তাতে একটি ডিজাইন আছে এবং তা একটি অর্থও প্রকাশ করছে এবং তার একটি প্রয়োজনও আছে। মূলত এ বিষয়গুলোর জন্যই গ্রাফিক্স ডিজাইন।