নাটক বা সিনেমায় একটি বাস্তব ঘটনাকে ফুটিয়ে তোলার জন্য গল্পের বিভিন্ন অংশকে একীভূত করে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। প্রযুক্তিগত উপাদানগুলোর মধ্যে (সাউন্ড, লাইটিং এবং এডিটিং) লাইটিং একটি গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে। দর্শকদের উপর ভিজুয়্যাল ইম্প্রেশন সম্পুর্নভাবে পরিপুর্ণ লাইটিং এর উপর নির্ভর করে। যথেষ্ঠ কাজে আসে লাইট, দর্শকের চোখ ধরে রাখতে পর্দায়।
যদিও বাজারে লাইটিংএর জন্য বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম পাওয়া যায়, তবে কিছু সাধারণ ক্ষেত্রে বাজারে সচরাচর পাওয়া যায় এবং কম দামী জিনিষ থেকেই লাইটিং এর সরঞ্জাম বানানো যায়। সাধারণ যে কোন হার্ডওয়্যারের দোকান থেকে মেটাল রিফ্লেক্টরের লাইট কেনা যায়, যেগুলো রিপেয়ারের দোকানে ব্যবহার করা হয়। এগুলো ক্লিপে আটকিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করা যায়।
সাদা আলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি হোয়াইট বোর্ড থাকতে হবে। ফিল্ম শুট করার সময় এটি বেশ গুরুত্বপুর্ন। এছাড়া কোন জিনিষের উপর আলো প্রতিফলিত করার জন্য এটি প্রতিফলক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
লাইটিঙ্গের আরেকটি সরঞ্জাম হল ডিফিউজার। এটি এক ধরনের সাদা স্বচ্ছ এবং পাতলা পলিথিন। এর মূল কাজ হচ্ছে অন্যপাশ থেকে আসা আলোকে ছড়িয়ে দেয়া। এই প্রক্রিয়ার ফলে আলোর বিপরীত পাশে যে বস্তুটি থাকে তা বেশী উজ্জ্বল দেখায় না।
একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, কোন লাইটিং সবসময় সাদা থাকেনা বরঞ্চ অন্য রঙ ধারন করে। ক্যামেরা ব্যবহার শুরু করলে এটা ভালোভাবে বোঝা যায়। যেমনঃ যদি একটি রুমের মধ্যে থাংস্টানের বাল্ব ব্যবহার করে শুট করা হয় তাহলে মুভি হলুদ রঙের হবে। আবার ফ্লুরসেন্টের লাইটে করলে সবুজ হবে।
প্রাকৃতিক আলোর দৃষ্টিনন্দন প্রভাব পেতে চাইলে সূর্যাস্তের সময় শুট করতে হবে। এই সময়ের আলো একটি সুন্দর কারামেল কালার দেয়। কিন্তু সুর্যাস্তের পুর্বে কেবল কয়েক মিনিট সময় পাওয়া যায় শট নেয়ার জন্য। বিশেষ করে বসন্ত এবং গ্রীষ্মের শেষে শুট করার জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময়।
এছাড়া আপনি থ্রী পয়েন্ট লাইটিং স্টান্ডার্ডস শিখতে পারেন, এটি ক্যামেরা ম্যান এবং ফটোগ্রাফারদের কাছে সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে আলাদা আলাদা উদ্দেশ্যে তিনটি লাইট ব্যবহার করা হয়। প্রথম লাইটটি মূল বস্তুটিকে উজ্জ্বল করে, দ্বিতীয়টি প্রথম লাইটের ছায়া মুছে দেয় এবং তৃতীয়টি মূল বস্তুর একেবারে পিছনে বসানো হয় এর ত্রিমাতৃক অবস্থান ফুটিয়ে তুলতে। আপনার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়ার জন্য লাইটগুলোকে ঠিকভাবে অ্যাডজাস্ট করে নিতে হবে। এই পদ্ধতিটি বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করা হয়। তাই আপনি চাইলে এটি অনুশীলন করে দেখতে পারেন এটি আপনার ক্ষেত্রে কেমন কাজে দেয়।
যারা এ বিষয়গুলোতে এক বারেই নতুন তাদের একটি অনুরোধ করছি। আজ থেকে টেলিভিশনের পর্দায় যাই দেখবেন সেটার আশে পাশে লাইট কোথায় আছে এবং কয়টা আছে ভাবতে চেষ্টা করবেন। আমাদের সাথে আলোচনার সময় আপনার কাজে দেবে। আমরা লাইটিংএর উপরে অনেক আলাপ নিয়ে আসবো, সাথেই থাকবেন।