গ্যালিলিও গ্যালিলি
গ্যালিলিও গ্যালিলি একজন ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ এবং দার্শনিক। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের মধ্যে রয়েছে দূরবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নতি সাধন যা জ্যোতির্বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। ১৬০৯ সালে গ্যালিলিও স্বাধীনভাবে এবং উন্নত ধরনের দূরবীক্ষণ যন্ত্র নির্মাণ ও এই যন্ত্রকে জ্যোতির্বিদ্যায় সার্থকভাবে প্রয়োগের করেন। এর আগে ১৬০৮ খ্রীষ্টাব্দে ওলন্দাজ চশমা নির্মাতা লিপেরশাইম তার নির্মিত এক দূরবীক্ষণ যন্ত্রের কথা প্রকাশ করেন এবং সেই বছরেই এই অদ্ভুত কাচ নির্মিত যন্ত্রের কথা সম্পর্কে জানতে পারেন গ্যালিলিওর। দূরবীক্ষণ যন্ত্রের নানা উন্নতি সাধন করে গ্যালিলিও দূরবর্তী বস্তুদের অন্তত ৩০ গুণ বড় করে দেখার ব্যবস্থা করেন।
দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে আবিষ্কৃত চাঁদের পৃষ্ঠের খাদ, ছোট-বড় অনেক দাগ ইত্যাদি বিষয় লিপিবব্ধ হয় তাঁর ‘সাইডরিয়াস নানসিয়াস’ বইতে যা প্রকাশিত হয় ১৬১০ খ্রীষ্টাব্দে। ভূপৃষ্ঠের ন্যায় চাঁদের উপরিভাগে যে পাহাড়, পর্বত, উপত্যকা, নদী, গহ্বর, জলাশয় প্রভৃতির দ্বারা গঠিত গ্যালিলিও এইরূপ অভিমত ব্যক্ত করেন। দূরবীক্ষণ যন্ত্রে বড় বড় কাল দাগ দেখে তিনি তাদের সমুদ্র মনে করেছিলেন, পরে অবশ্য এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে তিনি বিষমতারা, নক্ষত্রপুঞ্জ এবং কয়েকটি নীহারিকাও আবিষ্কার করেছিলেন। ১৬১০ খ্রীষ্টাব্দে গ্যালিলিও শনির বলয় আবিষ্কার করেন। ১৬১০ খ্রীষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে গ্যালিলিও সর্বপ্রথম সূর্যে কতগুলো কালো দাগ পর্যবেক্ষণ করেন। গ্যালিলিও বিজ্ঞানের জগতে পরিমাণগত পরিমাপের পদ্ধতির গোড়াপত্তনে অগ্রদূতের ভূতিকা পালন করেন। তার এই পরিমাপফলগুলো গাণিতিক সূক্ষ্ণতার বিচারে উত্তীর্ণ হয়েছিল। আরসেট্রিতে ১৬৪২ সালের ৮ই জানুয়ারি তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।